সুনামগঞ্জে স্ত্রীকে নির্যাতন করে হত্যার দায়ে স্বামী জালাল উদ্দীন নামের এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদ দিয়েছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত। বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোসাম্মৎ জাকিয়া পারভিন এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামি জালাল উদ্দিন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ইচ্ছারচর গ্রামের মো ছোবান মিয়ার ছেলে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে জানুয়ারিতে জামালগঞ্জ উপজেলার ফেকুলমামুদপুর গ্রামের আব্দুল গফুরের দ্বিতীয় ছেলে গোলাম জিলানীর মেয়ে সামিয়া বেগম(২০) কে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ইচ্ছারচর গ্রামের আব্দুল ছোবানের ছেলে জালাল উদ্দিনের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিবাহ দেয়া হয়। বিয়ের ২/৩ মাসপর সামিয়ার স্বর্ণালঙ্কার জোরপূর্বক বিক্রি করে দেয় জালাল। এর পর থেকে নানা অজুহাতে সামিয়াকে মারপিট করতে থাকে জালাল উদ্দিন।
একই বছরের অক্টোবরে সামিয়া বাবা বাড়িতে বেড়াতে গেলে স্বামীর বাড়ি যাবেনা বলে জানায়। পরে ৩০ অক্টোবর স্ত্রী নিজ বাড়িতে আনতে শ^শুর বাড়িতে যায় জালাল উদ্দিন। ওইদিন অক্টোবর রাতে স্বামী ও স্ত্রী জামালগঞ্জ উপজেলার ফেকুলমামুদপুর গ্রামের গোলামজিলানীর বাড়িতে ঘুমিয়ে পরে। রাত ১টার দিকে একটি দাড়ালো বটি দা দিয়ে জালাল উদ্দিন তার স্ত্রী সামিয়া বেগমকে এলাপাথারি কোপাতে থাকে। সামিয়া বেগমের গোঙ্গানীর শব্দ শুনে বাড়ির লোকজন ছুটে আসলে জালাল উদ্দিন পালিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে সামিয়া বেগমকে জামালগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে ৩১ অক্টোবর জালাল উদ্দিনকে একমাত্র আসামি করে জামালগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন আব্দুল গফুর। তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে জালাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে চার্জসীট দাখিল করে।
দীর্ঘ শুনানী শেষে আদালত বৃহস্পতিবার আসামি জালাল উদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন বিজ্ঞ আদালত। জরিমানা অনাদায়ে আরো ৩ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন।