সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযানের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলার রায়ে তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে সিলেটের সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুহাম্মদ নূরুল আমীন বিপ্লব এ রায় দেন। রায় ঘোষণাকালে আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি থানার বাইশারীর জহুরুল হক ওরফে জসিম (২৯), মো. হাসান (২৮) ও জহরুল হক ওরফে জসিমের স্ত্রী আর্জিনা ওরফে রাজিয়া সুলতানা (২১)।
সিলেট সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি মুমিনুর রহমান টিটু সাংবাদ মাদ্যমকে জানান, ২০১৭ সালের ২৪ মার্চ ভোরে আতিয়া মহলে জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের সময় এ তিন আসামি অন্য একটি মামলায় চট্রগ্রামে কারান্তরীণ ছিলেন। এ ছাড়া এ ঘটনায় সঙ্গে জড়িত সব জঙ্গি ঘটনাস্থলেই মারা গেছেন। তাই সাক্ষ্য প্রমাণে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস দেন বিচারক।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে আসামিপক্ষের আইজীবী অ্যাডভোকেট মো. শাহ আলম জানান, এ রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে অন্য মামলা থাকায় আসামিদের কারাগারেই থাকতে হবে বলে জানান এই আইনজীবী।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৩ মার্চ দিবাগত রাত থেকে আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযান শুরু হয়। অভিযানে র্যাব, পুলিশ, পুলিশের বিশেষ ক্রাইম রেসপন্স টিম (সিআরটি), সেনাবাহিনীর কমান্ডো দল অংশ নিয়েছিল। সেনাবাহিনীর পরিচালিত ‘অপারেশন টোয়াইলাইট’ শেষে ভবনের ভেতর থেকে এক নারীসহ চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
অপারেশন চলাকালে আতিয়া মহল থেকে কিছু দূরে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের তৎকালীন প্রধান লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুল কালাম আজাদ, দুই পুলিশ সদস্যসহ সাতজন নিহত হয়েছিলেন।
আতিয়া মহলে জঙ্গিবিরোধী অভিযান শেষে তিনটি মামলা হয়ছিল। মামলার প্রথম দিকে পুলিশ তদন্ত করলেও পরে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্তভার নেয়। ২০১৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করে পিবিআই। অভিযোগপত্রে তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়।
ওই বছরই চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পৃথক জঙ্গিবিরোধী অভিযানে জহুরুল ও তার স্ত্রী আর্জিনা এবং কুমিল্লার চান্দিনা থেকে মো. হাসানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে তাদের আতিয়া মহলের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
অন্যদিকে বোমা বিস্ফোরণ ও হত্যার ঘটনায় হওয়া দুটি মামলায় ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করে পিবিআই। প্রতিবেদনে মামলা নিষ্পত্তির আবেদন করা হয়েছিল।