সিলেটে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। বিভাগের চার জেলায় বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) পর্যন্ত ৪৯ জন সনাক্ত হয়েছেন এ ভাইরাসে। এর মধ্যে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মঈন গত ১৫ এপ্রিল চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এছাড়া মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় আরেকজন মারা গেছেন। তবে সম্প্রতি সিলেট ওসমানী মেডিকেলের গাইনি ওয়ার্ডে দু’জন রোগী ও একজন ইন্টার্ন চিকিৎসক আক্রান্ত হওয়ার পরপরই সিলেটে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এ ঘটনায় এ পর্যন্ত ওসমানী মেডিকেলের প্রায় একশ’র কাছাকাছি ইন্টার্ণ চিকিৎসক কোয়ারেন্টিনে আছেন। চিকিৎসকদের কোয়ারেন্টিন নিয়ে সিলেটজুড়ে ভয়ে চেপে বসেছে। একই সঙ্গে ‘উপসর্গবিহীন করোনা রোগী’ নিয়ে উদ্বিগ্ন চিকিৎসা সংশিøষ্টরা।
সবশেষ বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) হাসপাতালে একজন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও গাইনি ওয়ার্ডে একজন নারী করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর প্রায় শত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। তবে সোমবার পর্যায়ক্রমে সবার পরীক্ষা করা হবে বলেও জানায় সিলেট ওসমানী হাসপাতালের একটি সূত্র।
সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা আক্রান্তের বিষয়ে সিলেট বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য)’র কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. মো. আনিসুর রহমান বার্তাবাহককে বলেন, ওসমানী যে ইন্টার্ন চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন তিনি ঢাকা থেকে এসেছেন।
সেজন্য যোগদানের করার আগেই তার পরীক্ষা করা হয়। তবে সে যেহেতু হোস্টেলে ছিল, সেজন্য হোস্টেলের সবাইকে কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। তবে আমরা চিন্তা করছি তিনদিন পর কিছু স্যাম্পল নিয়ে পরীক্ষা করার জন্য। কারণ সবাইকে তো আর কোয়ারেন্টাইনে রাখা যাবে না। সেজন্য কিছু পরীক্ষা করে ডিউডিতে দেয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, শাসছুদ্দিন হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে বা করোনা আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন জেনে চিকিৎসকরা প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করছেন। কিন্তু ওসমানী মেডিকেলে কিন্তু করোনা রোগীও যাচ্ছে আবার সাধারণ রোগীও যাচ্ছে। আবার বেশিরভাগ লক্ষণ না থাকায় সমস্যাটা হচ্ছে বেশি; এটার চিন্তার বিষয়ও।
ওসমানীর সবাইকে পিপিই দিয়ে চিকিৎসা দেয়া যায় কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সবাইকে পিপিই দিয়ে করলেও লাভ হবে না। হয়তো চিকিৎসকরা একটু কম আক্রান্ত হবেন। কিন্তু একজন আক্রান্ত থেকে আরেকজন আক্রান্তের সম্ভাবনা তো থাকেই।
কারণ একজন চিকিৎসক দশজন রোগী দেখলো এরমধ্যে একজন রোগী আক্রান্ত হলে বাকী নয়জনও হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যাই হোক এটা নিয়ে আসলে আমরা নানাভাবে চিন্তা করছি। তবে মুশকিল হচ্ছে ঢাকা ফেরতদের নিয়ে।