চালের দাম বাড়ানো বন্ধ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার। তিনি বলেছেন, এখানে প্রথম কথা হচ্ছে দাম বাড়ানো বন্ধ হয়েছে। মোটা চাল যেটা আছে সেটার দাম তিন থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত কমেছে। আমরা আরও আমদানি করতে থাকব। তাই দাম আর বাড়ার সুযোগ থাকবে না। বরং ক্রমান্বয়ে কমবে।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি করা চাল খালাস কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তিনি প্রথমে যান চট্টগ্রাম সাইলোতে। সেখানে গিয়ে নির্মাণাধীন স্টিল সাইলো পরিদর্শন করেন। স্টিল সাইলো নির্মাণ সংক্রান্ত ফাইল দেখেন। পাশাপাশি কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক এসএম কায়ছার আলী, চট্টগ্রাম সাইলোর অধীক্ষক রাকিবুল হাসানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এরপর তিনি যান চট্টগ্রাম বন্দরে। সেখানে তিনি আমদানিকৃত চাল খালাস প্রক্রিয়া পরিদর্শন করেন।
খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার ভারত থেকে চাল আমদানি সম্পর্কে বলেন, বাণিজ্যকে আমরা রাজনীতির সঙ্গে মেলাচ্ছি না। ভারত যেহেতু আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী এবং ওখান থেকে আমদানি খরচ তুলনামূলকভাবে কম ও সস্তা দামে পাওয়া যায়, সেজন্য সেখান থেকে পণ্য আসাটা অব্যাহত আছে। আমরাও সেটাকে ওয়েলকাম করছি। পাশাপাশি মিয়ানমার আমাদের কাছে আরও চাল বিক্রি করতে চাচ্ছে। আমরা তাদের সঙ্গে এক লাখ টনের চুক্তি করেছি। তারা আরও বিক্রি করতে চাচ্ছে। আমরা তাদের দেশের অভ্যন্তরীণ এবং সরবরাহের অবস্থা দেখে এরপর বিবেচনা করব। এছাড়া আরও উৎসের সন্ধান আমরা করছি। পাকিস্তান থেকে আমরা ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির ব্যবস্থা করেছি।
রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য সহনশীল থাকবে উল্লেখ করে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, রমজান মাসে খাদ্য মন্ত্রণালয় বিশেষ করে চাল ও গম সবচেয়ে বেশি দেখাশোনা করে। বাকি কিছু আইটেম দেখভাল করে টিসিবি। সেটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে। টিসিবিও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে উপজেলায় প্রতিদিন দুই মেট্রিক টন চাল বিক্রি শুরু হয়েছে এ মাস থেকে। রমজান মাসেও এটা অব্যাহত থাকবে। সারা দেশে ৫০ লাখ লোকের জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু হয়েছে। দরিদ্র শ্রেণির ৫০ লাখ লোক মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাবে ১৫ টাকা করে। আশা করছি রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য সহনশীল থাকবে।
তিনি আরও বলেন, অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের দিক দিয়ে বেশি নজর দিচ্ছি। বিদেশ থেকে না আনতে পারলে আমরা সবচেয়ে বেশি খুশি হব। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা দুর্যোগ কবলিত দেশ। যে কোনোভাবে আমাদের দেশে দুর্যোগ আসে। দুর্যোগ এলেই আমাদের দেশের ফসল ক্ষতি হয়। এবার যদি অকাল বন্যা না হতো আমাদের এতটা চাপে পড়তে হতো না। আমরা চেষ্টা করছি যাতে আগামীতে ফসল ভালো হয়। খুব কম সময়ে যাতে অধিক ফসল ফলে অনেক গবেষণাগার সেজন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, গবেষণার ফসলের বীজ যেটা আছে সেটা কৃষকদের সরবরাহ করা হচ্ছে, যাতে কম সময়ের মধ্যে ফসল ফলানো যায় সে চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের দেশে তো মানুষ বাড়ছে। শিল্পায়ন ও নগরায়নের জন্য চাষের জমি বেছে নেওয়া হচ্ছে। আবার অনেক পুকুর করা হচ্ছে। এতে ধানের জমি কমে যাচ্ছে। আমের বাগান করছে। সবকিছু ব্যালেন্স করার জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
এ সময় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিন, খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আব্দুল খালেক ও বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামানসহ খাদ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।