বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

আপন দৃষ্টি ৬০

জিয়াউর রহমান-এর কবর বিতর্কের অবসান হবে কি?

আব্দুল মালিক

  • সাংবাদিক ও কলাম লেখক
  • ১২:২১ পূর্বাহ্ণ, ১ সেপ্টেম্বর ২০২১

আমরা চাই না বারবার একটি বিতর্ক জাতিকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দিক। শুধু তাই নয়, এ বিতর্কে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিভ্রান্তির মধ্যে ফেলে দেয়া হোক-তাও চাই না। সমাধানের উপায় যেহেতু আছে তাহলে এই বিতর্কের অবসান হতে অসুবিধা কোথায়? যারা বলছেন, এখন অনেক দেরি হয়ে গেছে, আমি বলতে চাই, এটাও তাদের মিথ্যাচার, ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে এক হাজার বছর পর হলেও লাশের পরিচয় শনাক্ত করা যায়।

২০১২ সালে এই ডিএনে টেস্টের মাধ্যমে লন্ডনে ৫৩০ বছরের পুরনো দেহাবশেষ পরীক্ষা করে প্রমাণ করা হয়েছে। যে এই দেহাবশেষ ইংল্যান্ডের রাজা তৃতীয় রিচার্ডের। রিচার্ড ১৪৮৫ সালে নিহত হয়েছিলেন। সেই সাথে তার দেহাবশেষ ২০১৫ সালে আবার রাজকীয়ভাবে সমাধি করা হয়।

১৯৮১ সালে ৩০শে মে জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর বার বার এই বিতর্ক এসেছে। এখন যেহেতু তাঁর লাশ নিয়ে একটি চ্যালেঞ্জ এসেছে, সেই চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে অসুবিধা কোথায়? যদি প্রমানিত হয় এটি জিয়াউর রহমানের লাশ। তাহলে সারা জীবনের জন্য এই বিতর্কের অবসান হবে। শুধু তাই নয়, সত্য হোক আর মিথ্যা হোক, জিয়াউর রহমানের উপর আনিত সকল অভিযোগও ষড়যন্ত্র বলে অভিহিত হবে।

জিয়াউর রহমানের হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে মেজর মোজাফফর এখনও জীবিত আছেন। ক্যু হওয়ার সময় তিনি পিটে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন এবং আহত অবস্থায় অনেক দিন পাহাড়ি এলাকায় অবস্তান করে ছিলেন। তিনি বর্তমানে উত্তর আমেরিকায় আছেন। ৯০ দশকের পর তিনি বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে এসেছিলেন। ১৯৯৪ সালের পর বিভিন্ন মিডিয়ায় বেশ কয়েকবার সাক্ষাতকারও দিয়েছেন। মোজাফফর জিয়াউর রহমানের লাশ চিনতে না পারলেও অনুমান করে সেখানে নিয়ে গিয়েছিলেন।

সর্বোচ্চ আদালত কর্তৃক রায়ে অবৈধ ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমান একজন মুক্তিযুদ্ধা এবং সেক্টর কমান্ডার হলেও কিন্তু তাঁর অতীত কর্মকান্ড ও ১৫ই আগস্টের পরবর্তী কর্মকান্ডে যদিও জিয়া মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ। এরশাদের মত তিনিও একজন স্বৈরশাসক যা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।

বিএনপি এই বিতর্কের অবসান করতে চায় না, কারণ সংসদ ভবনের পাশে চন্দ্রিমা উদ্যানের জিয়ার লাশ যে নেই এটাই কী প্রমানিত হয়ে যাবে? একই সঙ্গে প্রমাণিত হবে ১৯৭১ সালের পরাজয়ের বদলা এবং যুদ্ধাপরাধীদের পুনরুদ্ধার কার্যক্রমকে গতিশীল রাখার জন্য পাক পরামর্শে জিয়াউর রহমানের লাশের নামে ধোঁকা দেয়া হয়েছে।

সেই সাথে প্রমানিত হবে মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা এবং ১৫ই আগস্টের পর শত শত মুক্তিযোদ্ধাকে বিনা বিচারে ফাঁসি দেয়ার ঘটনা।


অন্যান্য খবর