ক্রমেই বাড়ছে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় লাশের সারি। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৪ জনে। এখনও নিখোঁজ আছেন অন্তত ১০ জন।
দুর্ঘটনার তৃতীয় দিনে নিখোঁজদের উদ্ধারে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের রংপুর, রাজশাহী ও কুড়িগ্রামের তিনটি ডুবুরি দল।
পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) ও তদন্ত কমিটির প্রধান দীপঙ্কর রায় বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সোমবার রাত ১০টা পর্যন্ত ৫০ জনের প্রাণহানির কথা নিশ্চিত হওয়া গিয়েছিলো। এরপর আজ সকাল থেকে আরও ১৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে সাতজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন শৈলবালা (৫১), সনেকা রানী (৫৫), হরিকিশোর (৪৫), শিল্টু বর্মণ (৩২), মহেন চন্দ্র (৩০), ভূমিকা রায় পূজা (১৫) ও আঁখি রানীর (১৫)।
লাশগুলো মারেয়া আউলিয়ার ঘাট, দেবীগঞ্জ করতোয়া সেতু ও দিনাজপুরের খানসামা সেতু এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের আউলিয়া ঘাট এলাকায় নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। কিছু মানুষ সাঁতরে নদীর তীরে ফিরতে পারলেও অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানায়, রোববার দুপুরে মহালয়া দেখতে আউলিয়া ঘাট থেকে নৌকায় বদশ্বেরী ঘাটে যাচ্ছিলেন সনাতন ধর্মাবলম্বীর প্রায় শতাধিক মানুষ। নৌকাটি ছাড়ার শুরুতেই দুলতে থাকে। এক পর্যায়ে দুলতে দুলতে মাঝ নদীতে গিয়ে ডুবে যায়।
এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রধান ও পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপঙ্কর রায় বলেন, এখন পযর্ন্ত ৫১ জনের মরদেহ উদ্ধার করে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমাদের কাছে থাকা তথ্য মতে আরও ১৯ জনের মতো লোক নিখোঁজ রয়েছে। তবে নিখোঁজের সংখ্যা নির্দিষ্ট করা বলা যাচ্ছে না। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের সৎকারের জন্য ২০ হাজার টাকা ও আহতদের পাঁচ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসন নিহত ৫০ জনের একটি নামের তালিকা সাংবাদিকদের কাছে দেন। এর মধ্যে নারী ২৫ জন, শিশু ১৩ জন ও পুরুষ ১২ জন।