নাগরিক শোক সভায় বক্তরা বলেছেন, সাংবাদিক পীর হাবিব ছিলেন, স্বাসধীন বাংলাদেশের একজন কলমযোদ্ধা। তিনি ছিলেন, সাধারণ মানুষের মুখপাত্র। তাঁর লেখনীর মাধ্যমে সোনারবাংলা প্রতিষ্ঠার জয়গান ছিল। তিনি অত্যন্ত সাহসী কলমসৈনিক ছিলেন।
শুক্রবার (১১ মার্চ) বিকেলে সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে সুনামগঞ্জ পৌরসবার উদ্যোগে দেশ বরণ্যে সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমানের নাগরিক শোক সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত নাগরিক শোকসভায় বক্তব্য রাখেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের ছিদ্দকী বীর উত্তম, জাতীয় সমাজত্রান্তিক দল জসদের সভাপতি ও তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রনালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ মতিউর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য আজিজুস সামাদ ডন, সুনামগঞ্জ-৫ আসনের এমপি মুহিবুর রহমান মানিক, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালযের সাবেক ভিপি রাগীব হাসান মুন্না, সুনামগঞ্জ-১ আসনের এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, সাংবাদিক প্রণব সাহা, বাংলাদেশের সাবেক কৃতি ফুটবলার কায়ছার হামিদ, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান প্রমুখ।
প্রয়াত পীর হাবিরের পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন, বড় ভাই মতিউর রহমান পীর, ছোট ভাই সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, ছেলে আহনাফ ফাহমিন অন্তর ও মেয়ে রাইসা নাজ চন্দ্রস্মিতা।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, সাংবাদিক পীর হাবিব ছিলেন, একজন লড়াকু সৈনিক। তাঁর লেখনীতে সুনামগঞ্জের পরিচিতি তুলে ধরেছেন। তিনি আমাদের অহঙ্কার। তিনি যেমন, সাধারণ মানুষের কথা পত্রিকার পাতায় তুলে ধরেছেন, তেমনী তিনি মুক্তিযোদ্ধের পক্ষের শক্তিকে সাহস যোগিয়েছেন।
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, পীর হাবিব আমার খুব প্রিয় ছিল। বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে পত্রিকার পাতায় যতটুকু লিখত। ঠিক ততটুকু আমার সম্পর্কেও লিখত। তার শুন্যতা আজ অনুভব করছি। পারপারে ভাল থাকিস হাবিব।
হাসানুল হক ইনু বলেন, সুনামগঞ্জের সন্তান পীর হাবিব তার লেখনীর মাধ্যমে ন্যায্য কথা বলার জন্য ও সাসহের সঙ্গে কথা বলার জন্য সুনাম কুড়িয়েছে। তার লেখনীতে অসাম্প্রদায়িক চেনতা ফুটে উঠেছে। হাবিব দুহাত খুলে লিখেছেনসামরিক শাসনের বিরোদ্ধে, সাম্প্রদায়িকতার রিরোদ্ধে গণতন্ত্রের পক্ষে।
মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, পীর হাবিবের সঙ্গে আমার তেমন যোগাযোগ ছিলনা। কিন্তুতার লেখার সঙ্গে আমার যোগাযোগ ছিল। আমি তার লেখা নিয়মিত পড়তাম। এবং তার লেখা থেকে আমি সংসদে বক্তব্য দিতাম। উদ্বৃতি দিতাম।
আজিজুস সামাদ ডন বলেন, সংবাদে পীর হাবিবের সুন্দর উপস্থাপনা ছিল। তিনি প্রকৃতি থেকে লিখতেন। তার লিখনীর মাধ্যমে সাসহ ছিল। সত্য ছিল।
এমপি মানিক বলেন, লেখনীর মাধ্যমে সুনামগঞ্জকে সারাদেশে পরিচিতি করে দিয়েছে পীর হাবিব। তার লেখনী সব সময় স্বাধীনতার পক্ষে সোচ্চা ছিল।
এমপি শামীম ওসমান বলেন, ট্রুথ ইজ বিউটি, বিউটি ইজ ট্রুথ। সত্যই সুন্দর এবং সুন্দরই সত্য। পীর হাবিবের লেখা যেমন সুন্দর ছিল, তেমনী সত্য ছিল। পীর হাবিব লেখনীর মাধ্যমে মানুষের জয়গান গেয়েছেন। সাধারণ মানুষের কথা বলেছেন। শামীম ওসমান আরও বলেন, আমি চলে গেলে দেশের কোন ক্ষতি হবে না। কিন্তু পীর হাবিব চলে যাওয়ায় দেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে। পীর হাবিব শুধু বাংলার নয়, সারা পৃথিবীর ছিলেন।
নূরুল হুদা মুকুট বলেন, সত্যকে সত্য এবং মিথ্যাকে মিথ্যা বলার সাহস ছিল পীর হাবিবের। এভাবে হাবিবের চলে যাওয়ায় আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। হাবিব ছিল সুনামগঞ্জের জলজ্যোস্নার প্রাণ। শহরের আসলে সবাইকে মাতিয়ে রাখতো হাবিব।
সাংবাদিক প্রণব সাহা বলেন, বন্ধুর স্মরণ সভায় বক্তব্য দেয়া খুবই কষ্টদায়ক। তিনি বলেন, পীর হাবিব আর আমি এক সঙ্গে লেখা পড়া করিনি। আমাদের বন্ধুত্ব লেখা পড়ার বন্ধত্ব নয়। এ বন্ধুত্ব ছিল পেশা দারিত্বের বন্ধত্ব। আমরা সংবাদ কাভারেজ করতে এক বিছানায় শুয়ে রাত কাটিয়েছি। অনেক গল্প ছিল। হাবিব ছিল ফাইটার। আমাদের বন্ধুদের মধ্যে সে ছিল এগিয়ে। এভাবে একজন ফাইটার হেরে যাবে ভাবিনি হাবিব। এভাবে চলে যাবে ভাবতে পারিনি।
নাগরিক শোকসভা যৌথভাবে পরিচালনা করেন, সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্কবায়ক সাজ্জাদুর রহমান সাজু ও সাংবাদিক মাসুম হেলাল।