সম্প্রতি জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য সংস্থা (এফএও) জানিয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বে লাখ লাখ মানুষকে না খেয়ে দিন কাটাতে হবে।
শুক্রবার (২৭ মে) এফএওর উপব্যবস্থাপক মাওরিজিও মার্টিনা এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কম করে হলেও ১৮ মিলিয়ন মানুষ খাদ্যাভাবে ভুগবে।
এর আগে ২০২১ সালের এক জরিপ থেকে জানা যায়, করোনা-পরবর্তী সময়ে ৫৩টি দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। এতে ২০০ মিলিয়ন মানুষ খাদ্যেরে অভাবে ভুগবে। মার্টিনা বলেন, ‘করোনার সঙ্গে যোগ হয়েছে ইউক্রেন যুদ্ধ। এতে অতিরিক্ত ১৮ মিলিয়ন মানুষ খাদ্যাভাবে ভুগতে পারে। যুদ্ধ যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে এই সংখ্যা আরও বাড়বে।’
বিশেষ করে রাশিয়া-ইউক্রেন গম আমদানি বন্ধ করে দেয়ায়, যেসব দেশ গমের ওপরে নির্ভরশীল- এমন উন্নয়নশীল দেশগুলো বিপদের মুখে পড়বে। মার্টিনা বলেন, বিশ্বের ৩৬টি দেশের ১০ শতাংশ গমের জোগান আসত রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে।
এদিকে কৃষ্ণসাগর বন্দর বন্ধ থাকায় সমুদ্রে আটকে আছে ৬ মিলিয়ন টন গম ও ১৪ মিলিয়ন টন ভুট্টা। সরবরাহ চেইনে বিঘ্ন ঘটায় দেশে দেশে বেড়ে গেছে খাদ্যশস্যের দাম। এ ছাড়াও সারের দাম বাড়ায় বেড়েছে উৎপাদন খরচ।
মার্টিনা বলেন, বিশ্বব্যাংকের মতে বিশ্বে খাদ্যপণ্যের দাম ১ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাবে। এতে ১০ মিলিয়ন মানুষ খাদ্য সংকটে ভুগতে পারে। অনেকে দেশ নিজেরা রফতানি বন্ধ করে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাচ্ছে। কিন্তু সেটা সম্ভব নয়। একা কাজ করে এই খাদ্যসংকট থেকে উত্তরণ পাওয়া যাবে না।’ মার্টিনার মতে, যতদ্রুত সম্ভব কৃষ্ণসাগরের বন্দর খুলে দেয়া উচিত। বন্দর বন্ধ থাকায় খাবারের দাম বেড়ে যাচ্ছে, বাড়ছে খাদ্যসংকট।
কিন্তু কৃষ্ণসাগরের বন্দর কে বন্ধ করেছে, এই নিয়ে পশ্চিমা ও রাশিয়া একে অপরকে দোষারোপ করছে। গত সপ্তাহে জাতিসংঘের সিকিউরিটি কাউন্সিলের রুশ প্রতিনিধি ভেসেলি নেবেনজিয়া বলেন, ‘আমরা ওডেসা বন্দর দিয়ে গম রফতানি করতে চাচ্ছি। কিন্তু বন্দরটি কিয়েভের দখলে থাকায় সেটি সম্ভব হচ্ছে না।
অনেকেই আমাদের এ ব্যাপারে দোষারোপ করছে, কিন্তু আমরা বন্দর বন্ধ করার মতো কিছু করিনি।’ শুক্রবার (২৭ মে) রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক জানানো হয়েছে, যতদ্রুত সম্ভব বন্দরের করিডোরগুলো খুলে দেয়া হবে। বর্তমানে বন্দরটিতে ১৬টি দেশের ৭০টি বিদেশি জাহাজ আটকা পড়ে আছে।