দেশের সবচেয়ে বড় মেট্রো সিলেট। ৫১৮ দশমিক ৪৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকা নিয়ে ২০০৬ সালে গঠিত হয় সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ। প্রতিষ্টার পর থেকে এই মেট্রোতে কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ৯ জন। এরমধ্যে সবশেষ দায়িত্বে আছেন মো. নিশারুল আরিফ। তিনি ২০২০ সালের ২৭ অক্টোবর এসএমপির ১৩ তম কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেন।
দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই কয়েকটি ভালো কাজের উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। এরমধ্যে হকার পূর্ণবাসনে সহযোগিতা, অবৈধ পার্কিং, নগরে অটোরিকশা সিএনজি কমিয়ে আনার ব্যপারেও আন্তরিত তিনি। এজন্য সিলেটের মানুষ আবারও মেট্রোপলিটন পুলিশের কার্যক্রম নিয়ে আশাবাদী। আশাবাদী নতুন পুলিশ কমিশনার নিয়েও। তবে নগরবাসী বলছেন, এসএমপির বিভিন্ন সদস্যদের ‘অনিয়ন্ত্রিত আচরণ আর বিতর্কিত বিষয়ে’ যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।
অথচ ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হবার পর নগরবাসীর নানা সংকটে, সম্ভাবনায় কিংবা বিপদে, প্রয়োজনে মেট্রোর পুলিশ সদস্যরা ৩৫০ আওলিয়ার পূণ্যভূমি হিসেবে পরিচিত সিলেট নগরবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছেন। কখনও সাহস দিয়েছেন আবার নগরের বিপদে কখনও কখনও নিজেরাই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এতে আস্থা বেড়েছিল মানুষের; সেজন্য ২০০৬ সালে দুই থানা নিয়ে পথচলা সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এখন ৬ থানা। এর বাইরেও ৬টি পুলিশ ফাঁড়ি আর দুইটি তদন্ত কেন্দ্র রয়েছে।
মানুষের সেই আস্থার জায়গা আবার ফেরাতে কাজ করছে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ। এজন্য নগরীর লোকজনকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেবা প্রদান করার জন্য প্রতিটি থানায় কিউআরটি টিম গঠন করা হয়েছে। গেলো ২৯ ডিসেম্বর ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন (ইমজা), সিলেটের সাথে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান মো. নিশারুল আরিফ।
প্রাকৃতিক কন্যা সিলেটে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের নানা অর্জণের মধ্যে ব্যর্থতাও আছে। আছে দুর্নামও। সবশেষ চলতি বছরের ১১ অক্টোবর সিলেট মেট্রোপলিটনের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ‘পুলিশি নির্যাতনে’ রায়হান নামে এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ তুলেন স্বজনরা। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত করেও এর সত্যতা পায় এসএমপি। এ ঘটনায় ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বড়খাস্ত করা হয়েছে।
এর আগে চলতি বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় স্বামীর সাথে ঘুরতে গিয়ে এমসি কলেজের ছাত্রবাসে ধর্ষণের শিকার হন তরুণী। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জড়িত ছিল। তবে মেট্রোপলিটন পুলিশ আলোচিত এ মামলার কোনো আসামিকেই গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এসব ঘটনার পর পুলিশের ভুমিকা নিয়ে আলোচনা সমালোচনা শুরু হলে ২২ অক্টোবর এসএমপি কমিশনার গোলাম কিবরিয়াকে বদলি করা হয়। একই আদেশে এসএমপির কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নেন নিশারুল আরিফ।
এরপর যোগদানের আগেই তিনি ‘পুলিশি নির্যাতনে’ নিহত রায়হানের বাড়িতে গিয়েছেন। আর যোগদানের পরে গিয়েছেন কয়েকবার। পাঠিয়েছেন উপহার সামগ্রী। সব মিলিয়ে বিষয়টি সিলেটের মানুষ ভালোভাবে নিয়েছে।
২৮ ডিসেম্বর সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাথে আলোচনা সভায় এসএমপির কমিশনার মো. নিশারুল আরিফ বলেন, কিশোর গ্যাং, চাঁদাবাজদের তালিকা প্রস্তুত করে তা প্রতিরোধে অ্যাকশন নেওয়া হচ্ছে। মাদকের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ ঘোষণা করে বলেন যদি কোন পুলিশ সদস্যও মাদকের সঙ্গে যুক্ত হয় তাহলে তাকে চাকুরিচ্যুত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি আরও বলেন, শিলং তীর খেলার এজেন্টদের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের কাছে তথ্য থাকলে তা দিয়ে সহায়তা করার জন্য আহবান জানান। প্রেস লেখা মোটরসাইকেল এর বিরুদ্ধে এসএমপি’র ট্রাফিক বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে যদি তাদের কাগজপত্র ঠিক না থাকে তাহলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।