দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সুনামগঞ্জের ৫টি আসনে ৪০ প্রার্থীর মধ্যে ৩১ প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছেন সুনামগঞ্জ রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী। এর মধ্যে ৯ প্রার্থীর মনোনয়নপত্রের ত্রæটি থাকায় তাদের মনোনয়ন অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) দিনভর সুনামগঞ্জের ৪টি আসনের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই ও বাছাই করেন রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী।
এসময় জেলা নির্বাচন অফিসার আলমগীর হোসেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ, জালালাবাদ গ্যাসের সুনামগঞ্জ বিতরণ ও বিক্রয় কেন্দ্রের ম্যানেজার শফিকুল ইসলামসহ বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তা, আয়কর কর্মকর্তা, বিটিসিএল ও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সুনামগঞ্জ-১ (জামালগঞ্জ-মধ্যনগর-ধর্মপাশা-তাহিরপুর) আসনে ৯ প্রার্থীর মধ্যে ৯ জনেরই মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। এরা হচ্ছেন,আওয়ামী লীগ মনোনীয় প্রার্থী রনজিত চন্দ্র সরকার, গণফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী মো.জাহানুর রশিদ, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি মনোনীত প্রার্থী মো. হারিছ মিয়া, জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মো. আব্দুল মান্নান, বাংলাদেশ কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী নবাব সালেহ আহমদ, তৃণমুল বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মো. আশরাফ আলী, বিকল্পধারা বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মো. রফিকুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, মো. সেলিম আহমদ।
সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আসনে ৬ প্রার্থীর মধ্যে ৩ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ এবং ৩ প্রার্থী মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং অফিসার। বৈধ প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মাহমুদ(আল আমিন চৌধুরী), গণতন্ত্রী পার্টির মনোনীত প্রার্থী মিহির রঞ্জন দাস, স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ড. জয়াসেন গুপ্তা। যাদের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে তারা হলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব মিজানুর রহমান, স্বতন্ত্র প্রার্থী যুক্তরাজ্য শ্রমিক লীগের সভাপতি মো. সামছুল হক চৌধুরী ও ঋতেশ রঞ্জন দেব।
সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ) আসনে ৬ প্রার্থীর মধ্যে ৫ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ও একজনের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষনা করেছেন রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী। বৈধ প্রার্থীরা হচ্ছেন, আওয়মী লীগ মনোনীত প্রার্থী পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, তৃণমুল বিএনপি মনোনীত প্রার্থী সাবেক এমপি শাহিনুর পাশা চৌধুরী, জাকের পার্টি মনোনীত প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম,জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী তৌফিক আলী ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী তালুকদার মো. মকবুল হোসেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মাহফুজুর রহমানের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ-৪ (সদর-বিশ^ম্ভরপুর) আসনে ৮ প্রার্থী মধ্যে ৭ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং অফিসার। তারা হলেন, জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী বর্তমান এমপি পীর ফজলুর রহমান, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ সাদিক, জাসদ মনোনীত প্রার্থী আবু তাহের মো. রুহুল ইসলাম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি(এনপিপি) মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ দিলোয়র, বিএনএম মনোনীত প্রার্থী সাবেক এমপি দেওয়ান শামছুল আবেদীন, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি(বিএসপি) মনোনীত প্রার্থী আবুল ফজল মো. মাসউদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. এনামুল কবীর ইমন। স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মোবারক হোসেনের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ-৫ (ছাতক-দোয়ারাবাজার) আসনে ১১ প্রার্থীর মধ্যে ৮ প্রার্থী মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছেন রিটার্নিং অফিসার। তারা হলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান এমপি মুহিবুর রহমান মানিক, জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী মো. নাজমুল হুদা, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট(বিএনএফ) মনোনীত প্রার্থী মো. আশরাফ হোসেন, জাকের পার্টি মনোনীত প্রার্থী শেখ ইয়াকুব আলী, গণফোরাম মনোনীত প্রার্থী আইয়ুব করম আলী, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি(বিএসপি) মনোনীত প্রার্থী আবু সালেহ,ন্যাশনাল পিপল্স পার্টি(এনপিপি) মনোনীত প্রার্থী আজিজুল হক, স্বতন্ত্র প্রার্থী শামীম আহমদ চৌধুরী।
যাদের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে, তারা হলেন জাতীয় পার্টি (জেপি)মনোনীত প্রার্থী মনির উদ্দিন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ মনোনীত প্রার্থী হাজী অব্দুল জলিল, বাংলাদেশ সাংস্কৃতি মুক্তিজোট মনোনীত প্রার্থী সাচ্চু বিশ^াস।
সুনামগঞ্জ-২ (দিরাই-শাল্লা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মিজানুর রহমানের মনোনয়নপত্র অবৈধ ঘোষনার কারণ হিসেবে রিটার্নিং অফিসার জানান, সংসদ নির্বাচনের আইন অনুযায়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ওই আসনের মোট ভোটারের একশতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর সংগ্রহ করে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হয়। এর মধ্যে কর্তৃপক্ষ ১০ জন ভোটারকে যাচাই করেন। এ যাচাইয়ে ১০ জনের মধ্যে ৫ জন ভোটার মো. মিজানুর রহমানকে সমর্থন দিলেও ৫ জন ভোটার সমর্থন দেননি বলে তদন্ত যাচাই কর্মকর্তা প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন।
এসময় স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মিজানুর রহমান বলেন, যাচাই কর্মকর্তা সঠিকভাবে যাচাই করেন নি। তিনি আপিল করবেন।
এসময় রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, যাদের মনোনয়ন অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে তাদের কাগজপত্রে ত্রæটি ছিল। যদি তারা সেগুলো সংশোধন করে আপিল করেন তাহলে তারা প্রার্থীতা ফিরে পেতে পারেন।