কয়েক দিন ধরে ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতোমধ্যে ঢলের পানি প্রবেশ করেছে শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে। আর এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন অন্তত ৫ লক্ষাধিক মানুষ।
মঙ্গলবার (১৮ জুন) ঢলের পানিতে তলিয়ে গেছে সুনামগঞ্জ জেলা শহরের বড়পাড়া, তেঘরিয়া, উত্তর আরপিননগর, মধ্যবাজার, নতুনপাড়া, বাধনপাড়া, মরাটিলা শান্তিবাগ, কাজীর পয়েন্ট, ষোলঘর ও নবীনগরসহ বেশকিছু এলাকা।
জেলা শহরের পাশাপাশি বন্যাকবলিত হয়েছে জেলার সদর উপজেলা, বিশ্বম্ভপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক, তাহিরপুর, শান্তিগঞ্জের নিম্নাঞ্চলের মানুষ।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানাযায়, মঙ্গলবার (১৮ জুন) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ ষোলঘর পয়েন্টে ৮ দশমিক ৪২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যা বিপদসীমার ৬২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৌসুমী মান্নান বার্তাবাহককে জানান, সদর উপজেলা ৬২টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছিল। বিকেলে উপজেলা সবক’টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম মুস্তফা মুন্না বার্তাবাহককে জানান, ছাতক পৌরসভা, উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়ন, নয়ারাই ইউনিয়ন ও গোবিন্দগঞ্জ সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের লক্ষাধিক বন্যাক্রান্ত হয়েছেন। এ উপজেলায় ১১৩টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে ৮৮টি আশ্রয় কেন্দ্রে বন্যার্তরা আশ্রয় নিয়েছে বলেও জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
তিনি আরও জানান, উপজেলা প্রশাসন বন্যার্তদের মধ্যে চাল,ডাল, চিড়া, মুড়ি, বিস্কুট, মোমবাতিসহ শুকনা খাবার বিতরণ করেছেন।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা পারভীন বার্তাবাহককে জানান, তাহিরপুরে ৩৫টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের সবক’টি গ্রামের লোকজনই পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নেহের নিগার তনু বার্তাবাহককে জানান, দোয়ারাবাজার উপজেলার সবক’টি সড়ক বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। বলতে গেলে উপজেলার সবক’টি গ্রামের মানুষই এখন পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত ১৯টি আশ্রয় কেন্দ্রে লোকজন উঠেছে।
শন্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা বার্তাবাহককে জানান, শান্তিগঞ্জে ৩৮টি অশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৪ শত পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বার্তাবাহককে জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। জেলায় ৫১৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।