সুনামগঞ্জের দোয়ারা বাজারে ক্যারাম বোর্ডের গুটি চাওয়াকে কেন্দ্র করে উকিল আলী হত্যা মামলায় ৭ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। রোববার (২০ আগস্ট) দুপুরে সুনামগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২য় এর বিচারক ঝলক রায় এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন কারাদÐ প্রাপ্ত আসামিরা হলেন, দোয়ারাবাজার উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের মতিন মিয়া, নুরুল হক, আনর আলী, আফতাব, সিরাজ আলী, মংলা মিয়া ও হেলাল। এর মধ্যে মংলা ও হেলাল পলাতক রয়েছেন।
জানা যায়, ২০০৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর দোয়ারাবাজার উপজেলার বাজিতপুর গ্রামে সড়কের পাশে একই গ্রামের মাসুক মিয়া ও হুশিয়ার আলীর ভুষিমালের দোকানের ব্যবসা ছিল। ঘটনার দিন বিকেলে হুশিয়ার আলী মাসুক মিয়ার কাছে ক্যারাম খেলার জন্য বোর্ডের গুটি চায় কিন্তু মাসুক মিয়া গুটি না দেয়ায় তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এসময় উপস্থিত গ্রামের লোকজন বিষয়টি সমাধান করে দেন।
ওইদিন বিকেল ৫ টার দিকে জামাল উদ্দিন ওরফে উকিল আলী গ্রামের পূর্বপাড়া মসজিদের নামাজে যাওয়ার সময় গ্রামের রাস্তার হুশিয়ার আলীর দোকানের সামনে পৌছলে প্রতিপক্ষের মতিন মিয়া, নুরুল হক, আনর আলী, আফতাব, সিরাজ আলী, মংলা মিয়া ও হেলালসহ তাদের সহযোগিরা উকিল আলীকে ঘিরে ধরে ছুলফিসহ অন্যান্য দেশী অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এসময় প্রতিপক্ষের ছুলফির ঘাতে উকিল আলী চিৎকার দিয়ে মাঠিতে লুঠিয়ে পড়ে। তাকে উদ্ধার করতে গেলে উদ্ধারকারিদের উপর প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা চালায়। তাদের চিৎকার শুনে গ্রামের লোকজন এগিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উকিল আলীকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওই দিনই নিহত উকিল আলীর ছোট ভাই আব্দুর রউফ দোয়ারা বাজার থানায় প্রতিপক্ষের মতিন মিয়া, নুরুল হক, আনর আলী, আফতাব, সিরাজ আলী, মংলা মিয়া ও হেলালসহ ১৮ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
দীর্ঘ শুনানী শেষে রোববার দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক আসামি মতিন মিয়া, নুরুল হক, আনর আলী, আফতাব, সিরাজ আলী, মংলা মিয়া ও হেলালকে যাবজ্জীবন কারাদÐ প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত আসামি মতিন মিয়া, নুরুল হক, আনর আলী, আফতাব, সিরাজ আলী উপস্থিত ছিলেন এবং আসামি মংলা মিয়া ও হেলাল পলাতক রয়েছেন।
বিচারক পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন।