সুনামগঞ্জে অটোরিক্সা চালক শুকুর আলী হত্যা মামলায় শাকিল মিয়া নামের এক অটোরিক্সা চালককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদলাত। মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) দুপুর পৌণে ১২টার দিকে সুনামগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ মো. হেমায়েত উদ্দিন এ রায় ঘোষণা করেন।
নিহত শুকুর আলী সুনামগঞ্জ পৌরসভার উত্তর আরপিন নগর এলাকা মৃত সেজুল মিয়ার ছেলে এবং যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শাকিল মিয়া সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার রঙ্গারচর ইউনিয়নের বিরামপুর গ্রামের নেছাউর রহমান ওরফে নূর মিয়ার ছেলে।
পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ড. খায়রুল কবির রুমেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্র জানায়, ২০২১ সালে ৮ মে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে অটোরিক্সা চালক শুকুর আলী তার ছোট ভাই রসুল মিয়া নিয়ে নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে শহরের ডিএস রোডে সুনামগঞ্জ সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় পৌছলে শুকুর আলী ও শাকিলের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শাকিল শুকুর আলীকে কিলঘুষি দিতে দেখে রসুল মিয়া বড় ভাইকে রক্ষা করতে এগিয়ে যায়। এসময় শকিল ছুরি দিয়ে প্রথমে রসুল মিয়ার কোমরে ছুরিকাঘাত করে। এসময় ছোট ভাইকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে শাকিল শুকুর আলীর পেটে ছুরিকাঘাত করলে আহত দুই ভাইয়ের চিৎকার শুনে আশে-পাশের লোকজন এগিয়ে এলে ঘাতক শাকিল পালিয়ে যায়।
সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয়রা শুকুর আলী ও রসুল মিয়াকে সুনামগঞ্জ ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। এসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক ছোট ভাই রসুল মিয়াকে হাসপাতালে ভর্তি ও বড় ভাই শুকুর আলীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ও সামনী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। কিন্তু শুকুর আলীকে অ্যাম্বুলেন্সে তোলার সময় স্বজনরা দেখেন শুকুর আলী শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছেনা। সঙ্গে সঙ্গে আবারও জরুরী বিভাগে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎস তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরদিন শুকুর আলীর মা মোছা. জাইরুন নেছা বাদী হয়ে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় ঘাতক শাকিলকে একমাত্র আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত শেষে পুলিশ আদালতে চার্জসীট দাখিল করে। ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও দীর্ঘ শুনানী শেষে মঙ্গলবার সুনামগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ মো. হেমায়েত উদ্দিন মামলার একমাত্র আসামি শকিলকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
রাষ্ট্র পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ড. খায়রুল কবির রুমেন এবং আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী।