ঢাকার কেরানীগঞ্জে দর্শনাগামী একটি বাস থেকে ৫ কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ৬৩৭ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করেছে কাস্টমস গোয়েন্দা। এসময় ৩ ভারতীয় নাগরিকসহ ১২ জনকে আটক করা হয়েছে।
আটকরা হলেন, রাহাত খান (৩৩), মোহসিন আল মাহমুদ(২৯), কাজী মামুন (৩৪) ও সৈয়দ আমীর হোসেন (৩৪), শামীম (২৩), মামুন (৩৭), বশির আহমেদ কামাল (৩৭), মামুন সরকার (৩৭), আতিকুর রহমান মীনা (৪২) এবং ভারতীয় ৩ জন নাগরিক নবী হুসাইন (৪৬), শাহাজাদা (৪৭) ও মোহাম্মদ ইমরান (৩৭)।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সংস্থার সদস্যরা জানতে পারেন, শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার গাবতলী মাজার রোড থেকে বাবুবাজার ব্রিজ হয়ে দর্শনাগামী পূর্বাশা ও রয়েল পরিবহনের দুটি এসি বাসে ও যাত্রীদের মাধ্যমে স্বর্ণ চোরাচালান হতে পারে। ওই সংবাদের ভিত্তিতে শুল্ক গোয়েন্দার উপ পরিচালক সানজিদা খানমের নেতৃত্বে একটি দল ঢাকার দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের চুনকুটিয়ায় অভিযান চালায়। রাত ৩টায় পূর্বাশা ও রয়েল পরিবহনের এসি বাস দুটি শুল্ক গোয়েন্দাদের নজরে আসে। পরে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানা পুলিশের সহযোগিতায় শুল্ক গোয়েন্দারা দুইভাগে ভাগ হয়ে বাস দুটির ভেতরে উঠে বিভিন্ন স্থান ও যাত্রীদের তল্লাশি করেন।
প্রাথমিকভাবে সন্দেহভাজন যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা স্বর্ণবার থাকার কথা অস্বীকার করেন। এরপর সন্দেহভাজন যাত্রীদের শরীরে লুকায়িত অবস্থায় স্বর্ণ আছে কিনা তা নিশ্চিত হতে পার্শ্ববর্তী ঝিলমিল হাসপাতালে নিয়ে এক্সরে পরীক্ষা করা হয়। এ সময় মোট ১২জন যাত্রীর মধ্যে ৫ জনের রেক্টাম এবং ৭ জনের লাগেজের হ্যান্ডলবার, মানি ব্যাগ কাঁধ ব্যাগের বিভিন্ন অংশে বিশেষভাবে লুকায়িত অবস্থায় মোট ৭ হাজার ৪৩২গ্রাম বা ৬৩৭ দশমিক ১৭ ভরি স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত স্বর্ণের আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা।
শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সানজিদা খানম বলেন, আটক যাত্রীদের কাছে উদ্ধার হওয়া স্বর্ণ বার আমদানি বা কেনার স্বপক্ষে বৈধ কোনো দলিলাদি পাওয়া যায়নি। উদ্ধার স্বর্ণ ও আটকদের পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সহযোগিতায় ঢাকায় কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের সদর দপ্তর আনা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রাথমিক অনুসন্ধানে এবং প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণে প্রতীয়মান হয়েছে, উদ্ধার স্বর্ণবারগুলো চোরালানের জন্য ঢাকা থেকে নেয়া হচ্ছিলো। আটকরা এ কাজে সরাসরি জড়িত। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের অন্য সদস্যদের আইনের আওতায় আনার কাজ চলছে।
স্বর্ণ উদ্ধারের বিষয়ে বিভাগীয় মামলা ও আটকদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।